বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে আসামির স্বীকারোক্তি

নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে আসামির স্বীকারোক্তি

স্বদেশ ডেস্ক:

শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন থাকার পরও হত্যা মামলার এক আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করায় চাঁদপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) নূরে আলমকে শোকজ করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট আসামির চিকিৎসাসেবা ও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ না দিয়ে কোন এখতিয়ারবলে ওই জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে তার ব্যাখ্যা জানাতে বলা হয়েছে। হত্যা মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল রবিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম

ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামি ফরহাদের ছয় মাসের জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি তার বয়স নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ফরহাদকে এ মামলায় কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পিয়ারীখোলা গ্রামে কাঠমিস্ত্রি সোহেল রানাকে (১৭) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বড় ভাই সাইফুল বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরদিন হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে ফরহাদ হোসেন প্রকাশ (খলু) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুন হওয়া সোহেল রানার বিচ্ছিন্ন মস্তক উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহত সোহেলের ১৫ হাজার টাকার মুঠোফোন ছিনিয়ে নিতেই ফরহাদ ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে এ হত্যাকা- ঘটায়। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ফরহাদ।

জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তখনকার চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরে আলম মন্তব্য কলামে লিখেছেন, ‘আসামির দুই হাতের কব্জির নিচে দড়ি দিয়ে দীর্ঘক্ষণ বাঁধার চিহ্ন দেখা যায়। এ ছাড়া পায়ের তালুতে ও পা ফোলা দেখা যায়। আসামির দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানোর প্রমাণ তার দুই কব্জির নিচের কালসিরা দাগ থেকে প্রমাণ হয়। আসামি রিমান্ডের ভয়ে এই জবানবন্দি করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

এই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ফরহাদ। জামিন শুনানিকালে তার আইনজীবী রিমি নাহরীন বলেন, গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এই আসামিকে নির্যাতন করেছে। এর পরও ম্যাজিস্ট্রেট তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। এই জবানবন্দি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয়। তিনি বলেন, জবানবন্দিতে আসামির বয়স ১৬ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ অভিযোগপত্রে ১৯ বছর দেখিয়েছে। একজন শিশুকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে চার্জশিট দেওয়ায় আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ফরহাদের সঠিক বয়স নির্ধারণে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই মামলায় ফরহাদসহ তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন থাকার পরও জবানবন্দি রেকর্ড করায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877